শুরু হল অমল আলো বর্ষপূর্তি উৎসব – সুতপেশ চক্রবর্তী

দর্শক পরিপূর্ণ অশোকনগর অমল আলোতে শুরু হলো ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর বর্ষ পূর্তি উৎসব।

অমলেন্দু চক্রবর্তীর নামে নামাঙ্কিত অমল আলো একটি থিয়েটার উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে গত বছর অশোকনগরে। অশোকনগর নাট্যমুখের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এই স্পেস। মহানগর থেকে যার ভৌগলিক দূরত্ব অনেকটাই। কোভিড উত্তর কালে নাটক দেখার জন্য টিকিট কেটে দর্শক পরিপূর্ণ হলে আজ প্রথম বর্ষ পূর্তি নাট্য উৎসবের সূচনা হলো। কলকাতার দশটি নাট্যদল শ্যামবাজার নাট্যচর্চা কেন্দ্র, নিউব্যারাকপুর দৃশ্যান্তন,বারাসাত জনস্বর,স্টেজ দ্য ক্রিয়েটিভ ওয়ার্ল্ড, হাতিবাগান শিল্পীচক্র, জোঁড়াসাঁকো প্যাঁচার দল, ঢাকুরিয়া নাট্যমুখ, গোত্রহীন দমদম,নটমন মধ্যমগ্রাম এবং বারাসাত থিয়েটার জোন। সহযোগিতায় অশোকনগর নাট্যমুখ। উৎসব চলবে ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর ‘২১ পর্যন্ত। বাংলা থিয়েটারের পাঁচ অভিনেত্রী যোগমায়া বসু, রোনিয়া রায়, জয়িতা চৌধুরি, সোমা দাস ও সঞ্জিতা মুখোপাধ্যায় পাঁচটি প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। নাট্যমুখ এর পক্ষ থেকে সকলকে উত্তরীয়, স্মারক ও বই তুলে দেন থিয়েটারের সাথে যুক্ত গুণী মানুষজনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিক্ষক ড. মনোজ ঘোষ, অভিনেত্রী ঝুনু দে নাগ, কবি সোমা মুখোপাধ্যায়, পোশাক পরিকল্পক রিক্তা দাস বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী মোম বিশ্বাস এবং ডায়না বিশ্বাস। পাশাপাশি এই মঞ্চে আজ গ্রুপ থিয়েটার পত্রিকাকেও সম্মানিত করা হয়। পত্রিকার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সহযোগী সম্পাদক ড.অপূর্ব কুমার দে। তাঁর হাতেও সম্মান স্মারক তুলে দেওয়া হয়। সকলেই এই অমল আলো এবং উৎসবের সাফল্য কামনা করেন। প্রারম্ভিক অনুষ্ঠানের স্বাগত ভাষণ দেন দলের প্রাণপুরুষ অভি চক্রবর্তী। সংযোজনায় সংগীতা চক্রবর্তী। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সৌমেন্দু হালদার ও ঝুমুর ঘোষ। সহযোগিতায় অর্পিতা, তনুশ্রী, শ্রেয়া, তানিয়া, দেবাদ্রিতা, অঞ্জন, গৌতম, ডঙ্কুু, রুমকি, অদ্রীশ। তত্ত্বাবধানে সমীর ভট্টাচার্য। উৎসব কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন অসীম দাস ও অরূপ গোস্বামী।

প্রথম দিনে দর্শক প্রশংসিত দুটি নাটক পরিবেশিত হয় শ্যামবাজার নাট্যচর্চা কেন্দ্রের ‘টেলিস্কোপ’ ও দৃশ্যান্তনের ‘ভোমর’

প্রথম নাটক টেলিস্কোপ নাটকটিতে নাট্যকার মধুসূদন মুখোপাধ্যায় যে কথা বলতে চায় তা হলো মানুষ সৃজনশীল। সে চায় নিজের সীমাবদ্ধতাকে পেছনে ফেলে আরো দূরে পৌঁছতে, আরো নতুন কিছুর সন্ধান পেতে।টেলিস্কোপ নাটকটি গলো একটি মেয়ের অনন্ত ক্যানভাসে টেলিস্কোপে চোখ রেখে দূরের অদম্য ইচ্ছেকে জানার। একদিন টেলিস্কোপ ছাড়াই দূরের অভিজ্ঞতা সন্ধান মেলে মেয়েটির। অভিনয়ে – মৃত্তিকা বসু সমরেশ বসু ও প্রীতি কর্মকার। নির্দেশনা -সানি চট্টোপাধ্যায়, প্রযোজনা – শ্যামবাজার নাট্যচর্চা কেন্দ্র।

দ্বিতীয়টি সাহিত্যিক রমেশচন্দ্র সেনের গল্প অবলম্বনে ভোমর। নাটক নির্দেশনা শৌভিক ঘোষ। সমাজ থেকে আলাদা একটি জাতি ডোম। সমাজ বহিস্কৃত দুই বন্ধু একসাথে থাকা হারু আর বদনের প্রতিদিন মরা পুড়িয়ে চলে সংসার। মৈথুনের তাগিদেই তারা কখন যে অপরের শরীরে মিশে যায় নিজেরাই বুঝে উঠতে পারে না। সম্পর্কের বাঁধনে জড়াতে জড়াতে গল্প এগিয়ে চলে নিজের তাগিদে। দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায় সন্দীপ শুভজিৎ,শৌভিকদের অভিনয়।

 

One thought on “শুরু হল অমল আলো বর্ষপূর্তি উৎসব – সুতপেশ চক্রবর্তী

  1. দারুণ নাট্য দেখলাম কাল। টেলিস্কোপ তো অনবদ্য। ভোমর ও বেশ অন্যরকম। প্রতিবেদককে অনেলানেক ধন্যবাদ।

Comments are closed.