অভিনয়ের সংসারে বড় হয়ে অনেকেই যেমন অভিনয়কেই বেছে নেয়, তেমনি সবাই যে সেই পথে যায় তা কিন্তু নয়। তবে মধুবন বেছে নিয়েছে থিয়েটারের পথ। আসলে মধুবনের মা বাংলা থিয়েটারের ব্যস্ততম এবং প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী। তার প্রতিটা দিন কাটে থিয়েটারের সঙ্গে, থিয়েটারের কাজে। আর মায়ের পথেই হেঁটে যেতে চায় মধুবন। আসলে ‘মধুবন’ কে সবাই চেনে ঝিল নামে। হ্যাঁ , ঝিল সেই থিয়েটারের পথের মানুষ। আর তার মা তো সঞ্জিতা।
ঝিল এর কথা অনুযায়ী থিয়েটারের কোলেই তার জন্ম। খুব ছোটবেলা থেকে পরিবারের মানুষদের অভিনয় করা নাটক দেখতে দেখতেই বড় হওয়া। বড় বলতে এখনও সে খুব বড় নয়। মাধ্যমিকের বেড়া ডিঙিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক। কিন্তু অভিনয়ের জগতে আগামীর সম্ভাবনা হিসাবে তাকে চিনে নিয়েছে থিয়েটার দুনিয়া। আর ঝিলও ঠিক করে নিয়েছে, থিয়েটারের পথেই থাকবে সে। মা সঞ্জিতা ছাড়াও ঝিলের বড় মামা, বড় মাসিও অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের কাছেই তার অভিনয় শেখা। স্বভাবতই থিয়েটারের সাথে আলাদা করে যোগাযোগ করার দরকার হয়নি। থিয়েটারই তাকে যুক্ত করে নিয়েছে। অবশ্য মা সঞ্জিতাই তাকে হাতে ধরে থিয়েটারে নিয়ে এসেছে তার মেয়েবেলা থেকেই।
কলকাতাতেই বেড়ে ওঠা ঝিলের। তবে ছোটবেলার অনেকটা সময় কেটেছে মামার বাড়িতে। হুগলির শিয়াখালা, দেশমুখা গ্রামে। বয়স যখন সবেমাত্র আট এর চৌকাঠে, তখনই তার প্রথম অভিনয়। দলের নাম অবশ্যই সবার পথ। আর নাটকের নাম- The Silent Play. তারপর থেকে যতবারই মঞ্চে উঠেছে, ততবারই যেন ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে নতুন করে চিনেছে। নিজের অস্তিত্ব অনুভব করেছে। এখন থিয়েটার ছেড়ে থাকার কথা ভাবতেই পারেনা। দলের সব কাজের সঙ্গেই নিজেকে যুক্ত করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, নির্দেশনাও দিয়েছে ইতিমধ্যেই। পরিকল্পনা করেছে, উচ্চ মাধ্যমিকের পরে থিয়েটার নিয়েই পড়াশুনো করবে। অনেক খ্যাতকীর্তি নির্দেশকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তার জীবনের ঝুলিতে। ঊষা গাঙ্গুলি, সঞ্জিতা, মনসীজ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিতাংশু খাটুয়া, কিংশুক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নানা নাটকের নানা চরিত্রে কাজ করতে করতে এতদিনে থিয়েটারের অনেক কিছু শিখেছে ঝিল।
ঝিল মনে করে, থিয়েটার নিয়ে থাকতে হলে অনেক সাহস লাগে। সেই সাহস সে অর্জন করেছে মা সঞ্জিতার প্রেরণায়। এই ঝুঁকিটা সে নিতে চায়। থিয়েটারই তার পথ, এটা ঝিল ঠিক করে নিয়েছে। ক্যারাটেতে গ্রীণ বেল্ট, ফটোগ্রাফিতে দক্ষ – তার সঙ্গে মডেলিং, নাচ, গান। নিজেকে থিয়েটারের উপযোগী হিসাবে প্রস্তুত করার জন্য নিয়মিত নানা নাটকের স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসা, শরীরচর্চা এবং অবশ্যই প্রচুর নাটক দেখার কাজে নিজেকে অভ্যস্ত করেছে। ঝিল অভিনীত নাটকগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য : আয় বৃষ্টি ঝেঁপে , The silent play, অ আ ক খ, একা আন্তিগোণে এবং তারপর, চণ্ডালিকা, কন্যা বিশ্রি, রামধনু, নকলি না, মাধুকরী, বীরপুরুষ, খত। নিজেদের দল ‘সবার পথ’। তবু অন্যান্য বেশ কয়েকটি নাট্যদলে অভিনয় করে ইতিমধ্যেই থিয়েটার মহলে নজর কেড়েছে ঝিল। তার প্রিয় চরিত্র অনেক। এক কথায়, সব নাটকের সব চরিত্রই প্রিয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য : ছোট আন্তিগোণে, চুড়িওয়ালির মেয়ে, বল্লরী, রূপকথা, মিলি, শ্রী, পৌলমী, বেলা। সামনে দীর্ঘ পথ। অনেক লড়াই। সেই লড়াই এ জিততে চায় মধুবন।
অনেক বড় হও ঝিল। কাজই তোমার পরিচয় হোক। তোমার পথই হোক ‘সবার পথ’।
অনেক ধন্যবাদ। এভাবেই নবীনদের কথা সবার কাছে পৌঁছে দিক অমল আলো।
আগুন পাখি ঝিল, এক আকাশ তোমার সামনে,দু ডানা মেলে দাও, উড়াল দাও ,তোমার আগামীর পথ শুভ হোক,মসৃন হোক বা নাই হোক,লড়াই টা ছেড়ো না!!!! অভিবাদন,কন্যা!!!!