২৬শে নভেম্বর অমল আলো বর্ষপূর্তি উৎসবের চতুর্থ দিনেও উৎসব প্রাঙ্গন ছিল একইরকম ঝলমলে এবং মুখর। ২০০০ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে নাট্যমুখের পথ চলা শুরু একথা জানেন এখন বাংলা নাট্যজগতের অনেকেই। ২১বছর ধরে শুধুমাত্র নাটকের অভিনয় শেখানোই নয়, সাথে সাথে গান, নাটক, আর্ট এন্ড ক্রাফ্ট, আবৃত্তিরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আছে ছোটদের পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থাও।
আজ অমল আলোয় ছিল দুটি নাট্য। প্রথমে অভিনীত হয় ‘অন্ধকারে দিন-রাত্রি’ ঢাকুরিয়া নাট্যমুখ প্রযোজনা। পরিচালক -দেবজ্যোতি ঘোষ। এই নাটকে প্রকাশ পেল সামাজিক অবক্ষয়। সেভাবে সমাজ বিপরীত পরিচালিত হচ্ছে এবং তা জাতির বুকে গভীর ক্ষত তৈরি করছে নানান স্তরের যা সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে অনিশ্চিত এক ভয়াল অন্ধকারের দিকে। আজ আমাদের দেশের কিছু মানুষ নানা ধরনের নৈতিক অবক্ষয়ের স্বীকার হচ্ছেন। সেটিই তুলে ধরা হয়েছে এই নাটকে। অনেক ধন্যবাদ ঢাকুরিয়া নাট্যমুখকে আজকের এই সময়ে এমন এক নাট্য পরিবেশন করবার জন্য।
দ্বিতীয় নাটক ছিল গোত্রহীন(দমদম)এর খোল দো। পরিচালক সুপ্রতিম রায়ের এই নাট্যটা দেখে চোখে জল এসে গিয়েছিল, কি নির্মম অত্যাচার। যখন একটি শিশু জন্ম হয় তখন একজন মায়েরও জন্ম হয়। এছাড়া স্ত্রী , বোন, কন্যাসহ মর্যাদা পূর্ণ সম্পর্কের বাঁধনে নারীরা সমাজের সাথে সম্পর্কিত। সাদাত হোসেন মান্টোর এই কাহিনী থেকে ব্যতিক্রমী পরিচালক সুপ্রতিম এই অনবদ্য নির্মাণ করেছেন। সামান্য কিছু মঞ্চবস্তু সামগ্রী ব্যবহার করে তার এই কাজ যথেষ্ট উল্লেখ্য। গল্পটা সংখেপে হলো – দেশ ভাগ, উদবাস্তু রিফিউজি ক্যাম্প, শেকড় ছিঁড়ে এলোমেলো হয়ে যাওয়া মানুষের জীবনের কথা থেকে শুরু। ক্যাম্পের ভেতরকার কথা।সীমানা পারাপারের সময় খুন হয়ে যায় সিরাজুদ্দীনের বিবি,হারিয়ে যায় তার মেয়ে সাকিনা। মেয়েকে খুঁজে চলে সর্বত্র। একসময় খুঁজেও পায় মেয়েকে। এই খুঁজে পাওয়ার বাস্তবতাকে ঘিরে যারা মঞ্চে মায়া তৈরি করে গেলেন শুভ্রাংশু, দীপা ব্রায়ান, সমর, চন্দনা, শুভজিৎ,শ্রমণারা। এটি একটি কর্মশালা ভিত্তিক প্রযোজনা।
নাট্যসৃজনী পত্রিকার সম্পাদক অন্তিকা চ্যাটার্জির হাতে সম্মান তুলে দেন নাট্য ব্যক্তিত্ব দীপক নাগ, এই উৎসবের ধারানুসারেই।
চমৎকার, থিয়েটারের জয় হোক।
বাহ। চমৎকার।