বিজয়কুমার দাস
বনগাঁয় জন্ম অরূপ গোস্বামীর। পরে শিশুকাল কেটেছে হাবড়া শ্রীপুরে। অবশেষে অশোকনগর কচুয়া মোড় কাঁকপুল এখন নাটুকে অরূপ গোস্বামীর পাকাপাকি ঠিকানা।বাড়িতে গানের চর্চা ছিল জোরকদমে। ঠাকুরদা ছিলেন গানের জগতের মানুষ। জ্যাঠামশাই ছিলেন সঙ্গীতসাধক জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের ছাত্র। বাবা (অনিল গোস্বামী) খুব ভালো গান গাইতেন। পুরোপুরি সাংস্কৃতিক পরিবারের মানুষ অরূপ গোস্বামী। সেই সূত্রে অরূপ হতে পারতেন গানের জগতের মানুষ। কিন্তু তার গাঁটছড়া বাঁধা হয়ে গেল থিয়েটারের সঙ্গে। আর থিয়েটারের সূত্রে অশোকনগর নাট্যমুখের সঙ্গে যোগাযোগ তাও ১৬ বছর। সেই নাট্যদলই এখন অরূপ গোস্বামীর ধ্যানজ্ঞান। মাঝে বছর খানেক শুধু দমদম গোত্রহীন দলে কাজ করার অভিজ্ঞতা।সেখানে পরিচালক ছিলেন শ্রী সুপ্রতিম রায়।এরপর অশোকনগর নাট্যমুখের কর্ণধার নাট্যজন অভি চক্রবর্তীর পরিচালনায় বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করে থিয়েটারের জগতে নিজেকে চিনিয়েছেন অরূপ।
প্রথমদিকে থিয়েটারের সঙ্গে তেমন যোগ ছিল না। বরং অভিনয় সখ্যতায় অরূপ যুক্ত হলেন ছোট ও বড় পর্দার সঙ্গে। সেই সূত্রে আকাশ বাংলা চ্যানেল এইটের কর্মশালায় যুক্ত হওয়া। ২০০৬ – ০৭ সাল নাগাদ সিদ্ধার্থ চক্রবর্তীর মাধ্যমে অরূপের যোগাযোগ ঘটে অশোকনগর নাট্যমুখের অভি চক্রবর্তীর সঙ্গে। ভাল লেগে যায় দলটিকে। দলের কর্ণধার অভি চক্রবর্তীর নির্দেশনায় বেশ কিছু নাটকে ভাল চরিত্রে অভিনয় করে থিয়েটার মহলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অরূপ গোস্বামী।
অথচ থিয়েটারে আসার আগে ছোট পর্দা বড় পর্দার কাজে এতটাই নিবিষ্ট ছিলেন যে থিয়েটার তার কাছে ছিল একটা সম্পূর্ণ অচেনা জগৎ। কিন্তু থিয়েটারে আসার পর গভীর বন্ধনে অরূপ আবদ্ধ হয়েছেন থিয়েটারের সঙ্গে। এবং অবশ্যই তা নাট্যমুখের সঙ্গে। শুধু অভিনয় নয়, নাট্যমুখের নানা প্রযোজনার কাজে নানাভাবে জড়িয়ে থাকতে থাকতে অরূপ অনুভব করেছেন যে, থিয়েটার একটা জরুরী মাধ্যম এবং সেখানেও অনেক কিছু শেখার আছে।
অশোকনগর নাট্যমুখ সারা বছর ধরে নিজস্ব নাটক প্রযোজনার পাশাপাশি থিয়েটার নিয়ে সেমিনার , কর্মশালা, থিয়েটারে নতুন প্রজন্ম তৈরি, বই প্রকাশ সহ নানা কাজে যুক্ত থাকেন। সব কাজেই অরূপ নিজেকে যুক্ত রাখতে ভালবাসেন। অভিনয় ছাড়া নাটকের নির্দেশনার কাজেও নিয়োজিত অরূপ। থিয়েটারে অভিনীত প্রায় সব চরিত্রই তার কাছে প্রিয়।
২০০৮ সালে অশোকনগর নাট্যমুখের ” কাগজের নৌকা ” দিয়ে শুরু হয়েছিল থিয়েটার জীবন। তারপর নাট্যমুখের দিবারাত্রি গদ্য, বিষণ্ণজন, রাতবিরেতের রক্তপিশাচ, বাঃ নর, কুহকিনী বীররাত্রি, লোহার দাম, মিস্টার রাইট এবং দমদম গোত্রহীন দলে ফ্যাতারু নাটকে অভিনয় করেছেন।
অশোকনগর নাট্যমুখেই অভিনেত্রী শাঁওলী মিত্র, অর্পিতা ঘোষ এবং দমদম গোত্রহীন দলে সুমন মুখোপাধ্যায়ের কর্মশালায় যোগ দিয়ে অভিনয়ের অনেক কিছু শিখেছেন অরূপ। নিজের থিয়েটার জীবনকে অশোকনগর নাট্যমুখের মত দলেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান । অন্য নাট্যদলে কাজ করার কথা তেমন করে ভাবেন না। মা আর ছেলের সংসার। এর বাইরে তার আর একটা সংসার অশোকনগর নাট্যমুখ। মা ( সান্ত্বনা গোস্বামী) তার থিয়েটার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রেরণা। মাকেই জীবনের পথপ্রদর্শক মনে করেন অরূপ। নাটক আর নাট্যমুখ এর বাইরে অরূপের জীবনে শুধু থিয়েটার, থিয়েটার আর থিয়েটার।
দারুণ বন্ধু। এগিয়ে চলো।
সহকর্মীর সাক্ষাৎকার পড়ে ভালো লাগলো। নাট্য মুখের সাথে দীর্ঘদিন ধরে অরূপদা রয়েছেন। ওর অভিনয় জীবন আরো এগিয়ে যাক। আমরা হাতে হাত বেধে একসাথে চলতে চাই বহু পথ।
❤️
দেরি হলেও তোমাকে অবশেষে ফোকাসে পাওয়া গেল। মনের কথাগুলোর জানলা খুলে গেলো।
অরূপ গোস্বামীর শিল্পঘরানায় বেড়ে ওঠার পরিচয় তাঁর পচ্ছন্ন অভিনয়ের অভিব্যাক্তিতে ই ধারাপড়ে। এই অভিনেতার যে কয়টি অভিনয় দেখেছি -মুগ্ধ ই করেছে। ‘বেচুবাবু’ দাগ কাটে…
অনেক ধন্যবাদ