সৌমেন্দু হালদার
গত ৩০ এপ্রিল, ২০২২ অশোকনগর অমল আলোয় অনুষ্ঠিত হল নৈহাটি সেমন্তী আয়োজিত এক নাট্যসন্ধ্যা। এই মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল এক আলোচনাসভা যার বিষয় ছিল ‛আমার থিয়েটার ও তার দর্শক’। এই আলোচনা সভায় বক্তাগণের আসন অলংকৃত করেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও থিয়েলাভার্স নাট্যদলের নির্দেশক ভর্গোনাথ ভট্টাচার্য, দমদম গোত্রহীনের নির্দেশক সুপ্রতীম রায় এবং অশোকনগর নাট্যমুখের বিশিষ্ট অভিনেত্রী তথা নির্দেশক সংগীতা চক্রবর্তী। সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন নাট্যকার বসন্ত পাথ্রেডকর।
প্রথমেই বক্তাগণ এবং সঞ্চালককে উত্তরীয়, পুষ্পস্তবক এবং নবরূপে প্রকাশিত বঙ্গদর্শন প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা জ্ঞাপন করেন সেমন্তীর নির্দেশক অলোক মিশ্র। এরপর আলোচনসভার সঞ্চালনার দায়িত্ব তিনি তুলে দেন বসন্তের উপর। তিনি প্রথমেই চলে যান তিন বক্তার মধ্যে সর্বাধিক অভিজ্ঞ ভর্গোনাথের কাছে। তিনি সঞ্চালক এবং দর্শকদের সঙ্গে ভাগ করে নেন তাঁর সুদীর্ঘকাল ধরে চলে আসা থিয়েটার চর্চার পথে বিভিন্ন প্রযোজনা নির্মাণ এবং সেগুলি সম্পর্কে দর্শকের প্রতিক্রিয়ার অভিজ্ঞতা। এরপর বসন্ত চলে যান সুপ্রতীমের কাছে এক নতুন প্রশ্ন নিয়ে। থিয়েটারে দর্শকের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি জানতে চান সুপ্রতীমের কাছে। প্রত্যুত্তরে সুপ্রতীম জানান কলকাতার দর্শকদের প্রতি তাঁর প্রবল অনীহার কথা। কারণ, তাঁর মতে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রায় একই দর্শকের মুখ তাকে দেখতে হয় কলকাতার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে। কিন্তু, মফস্বল বা প্রান্তিক এলাকাগুলিতে দর্শকের প্রাচুর্য এবং তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কথা তাঁর বিভিন্ন প্রযোজনার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি দর্শকদের জানান। সবশেষে বসন্ত সংগীতার কাছে জানতে চান, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের বাণী ‛থ্যাটারে লোকশিক্ষে হয়’- এই কথাটি যথার্থ কি না। এই কঠিন প্রশ্নবানের উত্তরে সংগীতা জানান তাঁর বিবিধ কর্মকান্ড এবং কিভাবে সেগুলি দর্শকের চেতনাকে প্রভাবিত করেছে তার কথা। এছাড়া পথশিশুদেরকে শিক্ষাদানের মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতিমনস্ক করে তোলার তাঁর প্রয়াসের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এরপর সুদক্ষ সঞ্চালক বসন্ত এই নাতিদীর্ঘ আলোচনাসভায় ইতি টানেন। আলোচনসভার পরেই মঞ্চস্থ হয় সুপ্রতীম রায়ের নির্দেশনায় নৈহাটি সেমন্তীর প্রযোজনা ‛একটি তুলসিগাছের কাহিনী’।
খুব জরুরি প্রতিবেদন।
👍🏼