বাংলা নাটকের পরম সুহৃদ অধ্যাপক দীপেন্দু চক্রবর্তীর প্রয়ান – সৌরভ গুপ্ত

কোরোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট নাট্য সমালোচক তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী সাহিত্যের অধ্যাপক শ্রী দীপেন্দু চক্রবর্তী। ১৯৪৫ সালে পাবনায় (অধুনা বাংলাদেশ) জন্ম, পাইকপাড়ার রানী হর্ষমুখী রোডে দীর্ঘদিন বাস করেন। দমদম কুমার আশুতোষ স্কুলে পড়াশুনো করেন। ছাত্রজীবনে বিষ্ণু দে, তারকনাথ সেন- এর মত কিংবদন্তী শিক্ষকদের সান্নিধ্য লাভ করেন। অসম্ভব মেধাবী দীপেন্দু চক্রবর্তী ১৯৬৫ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড হন। শ্রবণা মুন্সী প্রথম হন। এক নম্বর ব্যাবধানে। উনি স্যার গুরুদাস ব্যানার্জি প্রফেসর ছিলেন । প্রথম দিকে কিছুদিন যোগমায়া দেবী কলেজ এবং বিশ্বভারতী- তে অধ্যাপনা করে ১৯৬৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন এবং ২০০৪ সালে স্যার গুরুদাস ব্যানার্জি চেয়ার প্রফেসর হিসেবে অবসর নেন। ছাত্রদরদী, সুলেখক এবং সুবক্তা হিসেবে শ্রী চক্রবর্তী খ্যাতিমান হন। অনুষ্টুপ, অনীক ইত্যাদি পত্রিকায় নিয়মিত রাজনৈতিক প্রবন্ধ লিখতেন। ‛দ্য স্টেটসম্যান’ সংবাদপত্রে দীর্ঘদিন সংগীত সমালোচনা করেছেন।

বাংলা নাটকের প্রতি দীপেন্দুবাবুর নিবিড় টান ছিল। বস্তুত: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বাংলা থিয়েটারের সেতুবন্ধন গড়েছিলেন উনি। অত্যন্ত উৎসাহে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করানো, নাটক দেখতে যাওয়া তার নিয়মিত কর্মকান্ড ছিল। ‛দেশ’ পত্রিকার হয়ে নিয়মিত নাট্য সমালোচনা লিখতেন। বিভিন্ন নাট্য-দলের আয়োজিত সেমিনারে তিনি বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ পেতেন।

এই যশস্বী এবং জনপ্রিয় অধ্যাপকদের তারকা ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যাও কম নয়। তাঁদের মধ্যে আছেন আরেক যশস্বী অধ্যাপক-চিন্তক চিন্ময় গুহ, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই রনীত বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি। অনুষ্টুপ থেকে প্রকাশিত ‛প্রবন্ধ সংগ্রহ’, ‛সংস্কৃতির ক্ষয়-ক্ষতি’ তাঁর জনপ্রিয় গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম।

One thought on “বাংলা নাটকের পরম সুহৃদ অধ্যাপক দীপেন্দু চক্রবর্তীর প্রয়ান – সৌরভ গুপ্ত

  1. ভালো লাগল।
    গুরুত্বপূর্ণ লেখা।

Comments are closed.