বিজয়কুমার দাস
নদিয়া জেলার কল্যাণীর মেয়ে সুস্মিতা।পরিবারে কেউ কখনো থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। অথচ সেই পরিবারের মেয়ে থিয়েটারকে জড়িয়ে নিয়েছে জীবনের সঙ্গে।যদিও ঠাকুরদা পালাগানের সাথে যুক্ত ছিলেন। অবশ্য থিয়েটারে সুস্মিতার যুক্ত হওয়া নিয়ে বাড়িতে মা বাবা কোন আপত্তিও করেননি। সুস্মিতার কথায়, থিয়েটারের জন্য ঘর ছেড়েছি, মাঝপথে লেখাপড়া থামিয়ে দিয়েছি। থিয়েটার একটা অন্য জীবনের স্বাদ দিয়েছে। কল্যাণীর আঙিনা ছেড়ে সুস্মিতা নিজেকে কলকাতার থিয়েটার মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
যখন কেজি টু এর ছাত্রী তখন ” অবাক জলপান ” নাটকে প্রথম মঞ্চে নামা। পাড়ার দুর্গাপুজোতেও সবার সঙ্গে নাটকে অভিনয় করত। কিন্তু থিয়েটার তখন নিছক মজার জন্য। অথচ তখন থেকেই থিয়েটারের প্রতি টানটা থেকেই গিয়েছিল। তাই ২০১৫ সালে কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রে যোগ দিয়েছিল থিয়েটার করার জন্যই। কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রের মহড়াকক্ষে ঢুকে বলেছিল, সে নাটক করতে চায়। দলের কর্ণধার কিশোর সেনগুপ্ত মেয়েটিকে প্রশ্ন করেছিলেন – অভিনয় বলতে তুমি কি বোঝ ? মেয়েটি বলেছিল, সত্যিকে মিথ্যে আর মিথ্যেকে সত্যি করে থিয়েটার।তারপর শুরু হয়েছিল থিয়েটারচর্চা। ২০১৬ সালে নীলা বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ” শান্তমতি কথা ” নাটকে সুস্মিতা বিশ্বাস কলকাতার আকাডেমিতে অভিনয় করল। সুস্মিতা অনুভব করেছিল, থিয়েটার তাকে এক অদ্ভুত সত্যের খোঁজ দিয়েছিল। জীবনের যে অন্য একটা মানে আছে সেটা বুঝিয়েছিল। এরপর থেকে সুস্মিতার শয়নেস্বপনে নিশি জাগরণে শুধুই থিয়েটার।
তারপর থেকে বহু নাট্যদলের বহু নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছে সুস্মিতা।নিজেকে তৈরি করেছে একজন যোগ্য অভিনেত্রী হয়ে ওঠার জন্য। তবে বহু চরিত্রের মধ্যেও বেলঘরিয়া অভিমুখ এর প্রযোজনা “বাইশে আগস্ট ” নাটকে কুর্চি চরিত্রের প্রতি তার একটা বিশেষ ভালবাসা জন্মেছে। কুর্চি আসলে এক সাংবাদিক। এই চরিত্রটি সুস্মিতার ভাল লাগার একটা কারণ আছে। সুস্মিতার মনে হয়েছে, কুর্চি আসলে অসংখ্য মিথ্যের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে থাকা সত্যের সন্ধান করছে। কুর্চিরা চুপ করে থাকে না। কিন্তু বাস্তবে সবাই কুর্চি হয়ে উঠতে পারে না। বেলঘরিয়া অভিমুখের বাইশে আগস্ট নাটকের নির্দেশক তথা শান্তিপুর সাংস্কৃতিক চক্রের কর্ণধার কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলতেন, অভিনেতাকে অপেক্ষা করতে হয়। সুস্মিতার মনে হত, কবে প্রিয় পরিচালক কৌশিক চট্টোপাধ্যায় ডাকবেন! কিন্তু বাইশে আগস্ট এ কুর্চি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সত্যিই সুস্মিতার কাছে একদিন কৌশিকের ফোন এসেছিল। সেটা ছিল সুস্মিতার অভিনয় জীবনের পরম পাওয়া।
কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্র ছাড়াও খড়দহ রসিকতা, কল্যাণী সৌপ্তিক, বীজপুর চতুর্থ সূত্র সাংস্কৃতিক চক্র, কল্যাণী কলামণ্ডলম, চাকদহ নাট্যজন, চাকদহ শিল্পীচক্র, অশোকনগর অভিযাত্রী, অশোকনগর প্রতিবিম্ব, থিয়েলাইট, বেলঘরিয়া অভিমুখ প্রভৃতি দলে নাটকে অভিনয় করেছে সুস্মিতা।থিয়েটারে হাতেখড়ি যদিও কিশোর সেনগুপ্তর কাছে, তবু পরে সুব্রত সেনগুপ্ত, শান্তনু দাস সহ দুই প্রিয় পরিচালক অশোক মজুমদার আর কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও থিয়েটার শিক্ষা নিয়েছে সে। কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রে দীপঙ্কর দাসের কাছেও পেয়েছে প্রশিক্ষণ।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলি হল : দাগ, শনিবারগুলো, আমিই সে ( কল্যাণী সৌপ্তিক) , আব্বুলিশ ( শিল্পীচক্র), সাইক্লোন, চাঁদেরই সাম্পান( বীজপুর চতুর্থ সূত্র) , রাত ভরে বৃষ্টি, গোল্লাছুট ( কল্যাণী কলামণ্ডলম) , শুরু থেকে শেষ প্রান্তে ( অশোকনগর অভিযাত্রী) , বিল্বমঙ্গল কাব্য (চাকদহ নাট্যজন), চুয়াচন্দন (থিয়েলাইট), বাইশে আগস্ট (বেলঘরিয়া অভিমুখ) ইত্যাদি। তার অভিনীত নাটকের বেশ কিছু চরিত্র তাকে প্রভাবিত করে। শান্তমতি (শান্তমতি কথা), ড:স্মিথ (আবার যদি ইচ্ছে কর), রূপাই (দাগ), সুলগ্না( সাইক্লোন), অহল্যা ( বিল্বমঙ্গল কাব্য), তৃষা (চাঁদেরই সাম্পান), তিস্তা (শুরু থেকে শেষ প্রান্তে, মালতী(রাত ভরে বৃষ্টি), অপর্ণা (গোল্লাছুট), চুয়া (চুয়াচন্দন), কুর্চি(বাইশে আগস্ট) তাকে প্রতি মুহূর্তে প্রাণিত করে। কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, কিশোর সেনগুপ্ত, ছাড়াও শান্তনু মজুমদার, অভিজ্ঞান ভট্টাচার্য, প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য, কৌশিক সরখেল, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, অতনু সরকার প্রমুখ পরিচালকের অধীনেও অভিনয় করেছে সুস্মিতা। একসময় থিয়েটারে অভিনয় ছিল নেশা, কিন্তু পরে পেশা হিসাবেই বেছে নিয়েছে অভিনয়কে। যদিও এই কাজ খুব ঝুঁকির,তবু কঠিনেরেই ভালবেসেছে সুস্মিতা। অভিনয়ের টেকনিকাল নানা বিষয় শেখার জন্য কর্মশালা বা প্রশিক্ষণ নিয়ে এমন থিয়েটার হওয়া উচিৎ যা বহুজনের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
থিয়েটার জীবনে অনেক সুখকর অভিজ্ঞতাও আছে। একবার একই দিনে তপন থিয়েটারে সৌপ্তিক দলের দাগ আর মধুসূদন মঞ্চে কল্যাণী কলামণ্ডলম এর রাত ভরে বৃষ্টি নাটক ছিল। বিশিষ্ট অভিনেতা সঞ্জীব সরকারকে সুস্মিতা অনুরোধ করেছিল তার নাটক দেখার জন্য। সেদিন তপন থিয়েটারে অভিনয় করেই ছুটেছিল মধুসূদন মঞ্চে। আর দুই মঞ্চেই তার নাটক দেখতে হাজির হয়েছিলেন অভিনেতা সঞ্জীব সরকার। প্রশংসাও করেছিলেন সুস্মিতার অভিনয়ের। বাইশে আগস্ট নাটকের একই দিনে ডাবল শো করার অভিজ্ঞতাও তার কাছে স্মরণীয়। এভাবেই অভিনয়ে ক্রমশ জড়িয়ে যেতে যেতে সুস্মিতা বুঝেছে, থিয়েটারই তার ঘরবাড়ি। এখানেই থেকে যেতে চায় সুস্মিতা বিশ্বাস। চলতে চায় আরো অনেক অনেক পথ।
অগ্রগতি অব্যাহত থাক।চরৈবেতি।
শুভেচ্ছা রইলো।
потолочные натяжные потолки
https://1remont-kvartir-ekb.ru/
продать битое авто
https://skupauto24.ru/
выкуп авто новоуральск
https://1-vikupauto96.ru/
шары под потолок с доставкой
https://shary-kupit.ru/
гелевые шарики купить в москве
https://shary-kupit.ru
выкуп авто нижний тагил
https://vk.com/vikupauto96ru
где купить шарики
https://shary-s-gelem.ru/
подъемник ножничный передвижной
http://www.nozhnichnyye-podyemniki-dlya-sklada.ru
самоходная тележка
https://samokhodnyye-elektricheskiye-telezhki.ru
электрическая рохля
https://www.samokhodnyye-elektricheskiye-telezhki.ru/
вышка телескопическая
http://podyemniki-machtovyye-teleskopicheskiye.ru
подъемник мачтовый
https://podyemniki-machtovyye-teleskopicheskiye.ru
мачтовый подъемник
https://podyemniki-machtovyye-teleskopicheskiye.ru
подъемный стол гидравлический
https://gidravlicheskiye-podyemnyye-stoly.ru